চীন প্রতিনিধি: বাংলাদেশিদের অংশগ্রহণে চীনে সংস্কৃতি ও গ্রামীণ পুনর্জাগরণ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংলাপ সফলভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সমন্বয়পূর্ণ সহাবস্থান এই থিম নিয়ে, সংলাপটি ২৮শে এপ্রিল ঝচিয়াং প্রদেশের হুঝো শহরে আনচি কাউন্টিতে অনুষ্ঠিত হয়।
এই সংলাপের লক্ষ্য হল গ্রামীণ সাংস্কৃতিক নির্মাণের জন্য একটি আন্তর্জাতিক বিনিময় প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা, বিভিন্ন সভ্যতার মধ্যে পারস্পরিক শিক্ষার প্রচার এবং প্রেসিডেন্ট শি চিনপিংয়ের সবুজ উন্নয়ন ধারণাকে প্রচার করা।
দ্য চাইনিজ পিপলস অ্যাসোসিয়েশন ফর ফ্রেন্ডশিপ উইথ ফরেন কান্ট্রিস এবং ঝচিয়াং প্রভিন্সিয়াল পিপলস অ্যাসোসিয়েশন ফর ফ্রেন্ডশিপ উইথ ফরেন কান্ট্রিস এর সহযোগিতায় সংলাপটি যৌথভাবে আয়োজন করে দ্য হুঝো পিপলস অ্যাসোসিয়েশন ফর ফ্রেন্ডশিপ উইথ ফরেন কান্ট্রিস এবং আনচি কাউন্টি পিপলস গভর্নমেন্ট।
দ্য চাইনিজ পিপলস অ্যাসোসিয়েশন ফর ফ্রেন্ডশিপ উইথ ফরেন কান্ট্রিস এর সাংস্কৃতিক বিনিময় বিভাগের পরিচালক ঝু তান এর সভাপতিত্বে সংলাপে মূল বক্তব্য রাখেন থাইল্যান্ডের প্রাক্তন উপ-প্রধানমন্ত্রী এবং থাই-চীনা মৈত্রী সমিতির সভাপতি কর্ন ডাব্বারানসি।
তাছাড়া দ্য চাইনিজ পিপলস অ্যাসোসিয়েশন ফর ফ্রেন্ডশিপ উইথ ফরেন কান্ট্রিস এর ভাইস প্রেসিডেন্ট লি শিকুএ, সিপিপিসিসি ঝচিয়াং প্রদেশের ভাইস চেয়ারম্যান ইয়ে ঝংবো, চীনে মরিশাসের রাষ্ট্রদূত ওয়াং চুনওয়ান, নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং কেন্দ্রীয় সমবায় ও দারিদ্র্য বিমোচন বিভাগের প্রধান কমল চৌলাগাইন সহ অন্যান্য কূটনীতিক ও ব্যক্তিবর্গ সংলাপে অংশ নেন এবং বক্তব্য দেন।
কর্ন ডাব্বারানসি বলেন, তিনি ১০০ বারের বেশি চীন সফর করেছেন এবং এই সফরগুলো তার উপর গভীর ছাপ ফেলেছে। বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ হিসাবে, চীন দারিদ্র্য বিমোচন এবং গ্রামীণ পুনরুজ্জীবনের মধ্যে কার্যকর সংযোগে দুর্দান্ত সাফল্য অর্জন করেছে এবং বিশ্বের দারিদ্র্য হ্রাস ও উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে।
লি শিকুএ বলেন, গ্রামাঞ্চল মানুষের আধ্যাত্মিক আবাস, মানব সভ্যতার বিকাশের উত্স এবং এর অতুলনীয় সাংস্কৃতিক মূল্য রয়েছে। চীনা জাতির হাজার হাজার বছর ধরে কৃষিকাজের ইতিহাস রয়েছে এবং কৃষিকে কেন্দ্র করে গ্রামীণ সংস্কৃতি ঐতিহ্যবাহী চীনা সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। হাজার হাজার বছর ধরে, গ্রামাঞ্চল তার অনন্য প্রাকৃতিক পরিবেশ, উত্পাদন এবং জীবনধারার সাথে চীনা জাতির মৌলিক আদর্শকে গভীরভাবে আকার দিয়েছে। আমরা মুক্ত, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং সহযোগিতামূলক পদ্ধতিতে অন্যান্য দেশের জনগণের সাথে মানুষে মানুষে এবং সাংস্কৃতিক বিনিময়, সাংস্কৃতিক একীকরণকে উন্নীত এবং জনগণের মধ্যে বন্ধনকে উন্নীত করতে ইচ্ছুক। যাতে করে চীনা ধাঁচের আধুনিকীকরণ, মানব সভ্যতার নতুন রূপ এবং বিশ্ব সভ্যতার বাগানকে সমৃদ্ধ করা যায়।
বিভিন্ন সভ্যতার মধ্যে আদান-প্রদান ও পারস্পরিক শিক্ষার প্রসার, আধুনিকীকরণের পথে হাঁটতে হাত মেলান এবং সক্রিয়ভাবে উপদেশ ও পরামর্শ প্রদান লক্ষে, “গ্রামীণ সংস্কৃতির উত্তরাধিকার এবং উদ্ভাবন”, “গ্রামীণ সাংস্কৃতিক ও পর্যটন শিল্পের একীকরণ” এবং “আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং গ্রামীণ উন্নয়নের অভিজ্ঞতা বিনিময়” এই তিনটি বিষয়ের উপর সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।
চাইনিজ পিপলস অ্যাসোসিয়েশন ফর ফ্রেন্ডশিপ উইথ ফরেন কান্ট্রিজ এর আমন্ত্রণে চীনে অধ্যয়নরত চার বাংলাদেশি শিক্ষার্থী সংলাপে অংশ নেন। তারা হলেন মোহাম্মদ ছাইয়েদুল ইসলাম, মাইনুল ইসলাম আপন, মেহেদী হাসান সানি এবং মোঃ সোহাগ হোসেন।
সংলাপে, চীনা এবং বিদেশী অতিথিরা ব্যক্ত করেন যে তারা মানুষ ও সমাজের দৃষ্টিকোণ থেকে গ্রামাঞ্চলের সবুজ উন্নয়ন, মানুষ ও প্রকৃতির মধ্যে সহাবস্থান, সহ-সমৃদ্ধি এবং সাংস্কৃতিক উন্নয়নের জন্য, চীন এবং বিদেশী দেশের মধ্যে বিনিময়, এবং মানবজাতির জন্য একটি ভাল ভবিষ্যতের জন্য একসঙ্গে কাজ করবে।
বাংলাদেশ, নেপাল, আমেরিকা, যুক্তরাজ্য, আফগানিস্তান, মরক্কো, পাকিস্তান, লাওস, থাইল্যান্ড, গ্রীক, নরওয়ে, মরিশাস, নাইজেরিয়া, কেনিয়া এবং অন্যান্য দেশ ও অঞ্চলের ১০০ জনের বেশি চীনা ও বিদেশী প্রতিনিধি সংলাপে অংশ নেন। এছাড়াও ৪টি মহাদেশের ১৯টি দেশের “চায়না ইন মাই আইজ” ভিডিও প্রতিযোগিতায় বিজয়ীরা এই সংলাপের অংশগ্রহণ করে আলোচনা শুনেন।
Leave a Reply