তানভীর আহমেদ:
একটু সুখের আশায় সহায়সম্বল বিক্রি করে, লাখ লাখ টাকা খরচ করে দালালের খপ্পরে পড়ে সৌদি আরবে এসে দিশেহারা নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলার ১৮ জন প্রবাসী। আট থেকে নয় মাসের বেশি সময় বেকার থাকছেন অনেকে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন ভুক্তভোগী শ্রমিকরা।
জানা যায় উপজেলার কাচিকাটা ইউনিয়নের বড় মির্জাপুর গ্রামের তৈয়ব মেম্বারের ছেলে দালাল আতাউর রহমান (আতাবুর) জনশক্তি রফতানির সব নিয়মনীতি মেনে কৌশলে ফ্রি ভিসাকে কন্ট্রাক্ট ভিসা বলে চালিয়ে দিলেও সৌদি আরবে এসে কাজ পাচ্ছেন না অনেকে। পাশাপাশি বিভিন্ন লোভনীয় বেতনে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে বেকার ও অসহায় শ্রমিকদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে লাখ লাখ টাকা।
ভুক্তভোগীরা জানান, বিভিন্ন দেশের দালালের সঙ্গে জড়িত আতাবুর। মনোহরদী ও পার্শ্ববর্তী উপজেলার বেকার অসহায় শ্রমিকদের কাজের প্রলোভন দেখিয়ে সর্বস্বান্ত করে। প্রতারণার শিকার হয়ে সর্বস্ব হারিয়ে অনেক শ্রমিক দেশে ফিরে মানবতার জীবন যাপন করছে।
ভুক্তভোগী মোঃ হিরন মিয়া বলেন, আমাকে সৌদি আরবে হোটেল অথবা পার্টি সেন্টারে কাজ দিবে বলে ৮ মাস পূর্বে সৌদি আরবে এনেছে। এখানে আসতে ৫ লাখ টাকার ওপর খরচ হয়েছ। এখানে এসে গত ৮ মাস বেকার বসে আছি। কথা ছিল সৌদি আরবে আসা সাথে সাথে কাগজপত্র ও কাজ বুঝিয়ে দিবে। কিন্তু আট মাস অতিবাহিত হলেও আমার সাথে কোন যোগাযোগ করছে না দালাল আতাবুর আমি ফোন দিলে সে আমার ফোন ধরছে না তার সাথে যোগাযোগ করতে পারছিনা।
আরেক ভুক্তভোগী আনোয়ার বলেন, সৌদি আরব এসেছি নয় মাসের বেশি হয়ে গেছে। আসতে আমার চার-পাঁচ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এরপর থেকে বেকার বসে আছি। বাংলাদেশ থেকে টাকা পাঠালে টাকা পাঠালে খেতে পারি নয়তো বা না খেয়ে থাকতে হচ্ছে। আমার মত প্রায় ১৭ থেকে ১৮ জন প্রবাসী দালাল আতাবুরের প্রতারণার শিকার।
জানা যায় রুমবন্দি অবস্থায় সৌদি আরবে আছেন মনোহরদী উপজেলার হিরন,আনোয়ার,নুরুন্নবী,জাকির,কবির, মানিক, রাকিব ও পার্শ্ববর্তী কাপাসিয়া উপজেলার সজীব, ফয়সাল আরো অনেকে।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী হিরনের মা লিলি বেগম বাদী হয়ে আতাউর রহমান (আতাবুর) তার স্ত্রী মাহমুদা ও ভাই দুলাল কে অভিযুক্ত করে মনোহরদী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন ও স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন।
অভিযোগের ভিত্তিতে আরো জানা যায় আতাবুরের স্ত্রী মাহমুদা ও তার ভাই দুলাল প্রতারণা করতে সহযোগিতা করেন। ভুক্তভোগীরা প্রবাসে যেতে টাকা জমা দেন মাহমুদার একাউন্টে। আতাবুর বর্তমানে সৌদিতে আছেন। ভুক্তভোগীদের অভিভাবকরা আতাবুরের বাড়িতে গেলে তার ভাই ও স্ত্রী তাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করেন ও মামলা দেওয়ার ভয় দেখান। এ বিষয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা সাক্ষাৎকার দিতে অস্বীকৃতি জানান।
Leave a Reply