এম ওবায়েদুল কবীর:
চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন নরসিংদী জেলা শিবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা ইদ্রিস আলী মাস্টারের ছেলে, সাবেক এমপি কামাল হায়দার ও ফ্রান্স শাখা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক মাসুদ হায়দারের সহোদর ভাই মেজর ইকবাল হায়দার ৭ জানুয়ারি বিকাল ৩টা ৪০ মিনিটে ঢাকা সিএমএইচ হাসপাতলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, দুই কন্যা সন্তানসহ অসংখ্য গুণগাহী রেখে যান। তার মৃত্যুতে পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনসহ রাজনৈতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে আসে।
সকালে সড়কপথে লাশ বাহি ফ্রিজার কারের মাধ্যমে মরহুমের মরদেহ তার এলাকা শিবপুরের চক্রধা ইউনিয়নের বৈলাব গ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়। গত সোমবার দুপুর আড়াইটায় চক্রধা ইউনিয়নের বৈলাব গ্রামে মরহুমের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। তার মৃত্যুতে বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠন শ্রদ্ধা জানান। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বিকাল ৩ টায় তার মরদেহ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
মেজর মো. ইকবাল হায়দার (অব.)-এর জন্ম ৮ মার্চ ১৯৫৫ নরসিংদী জেলার শিবপুর উপজেলার বৈলাব গ্রামে। তার পিতা মো. ইদ্রিস আলী মাস্টার ও মাতা সাজেদা খাতুন। তিনি একজন মেধাবী ছাত্র ছিলেন। তিনি ৫ম এবং ৮ম শ্রেণিতে বৃত্তি লাভ করেন। এছাড়াও ১৯৭০ সালে ১ম বিভাগে এস.এস.সি পাস করেন। তিনি সরকারী তিতুমীর কলেজ থেকে এইচ.এস.সি পাস করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগে অনার্স অধ্যয়নকালে তৎকালীন জাতীয় রক্ষী বাহিনীর লিডার (অফিসার) হিসেবে যোগদান করে ভারতের উত্তর প্রদেশের তান্ডুয়া প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। অতঃপর বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে সেকেন্ড লেফটেনেন্ট হিসেবে কমিশন লাভ করে, তৎকালীন বাংলাদেশের প্রথম মিলিটারি একাডেমি (বিএমএ) কুমিল্লা সেনানিবাসে অফিসার্স ওরিয়েন কোর্স সমাপ্ত করেন। তিনি ইঞ্জিনিয়ার ব্যাটালিয়নে পোইল লাভ করেন।
তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোরে ১২ বৎসর চাকরি করার পর সিনিয়র মেজর হিসেবে ৮ জানুয়ারি ১৯৮৮ তারিখে সেনাবাহিনীর চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করেন। ১০ জানুয়ারি ১৯৮৮ তারিখে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার হিসেবে যোগদান করেন। ৭ মার্চ ২০১৫ তারিখে সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন। তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধের একজন সংগঠক ছিলেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নৌকা প্রতীক মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন বলে জানা যায়। তিনি ‘আমার যত কথা’ নামক একটি বই লেখেন। ২০১৪ সালে বাংলা একাডেমির বইমেলায় এই বইয়ের প্রথম মোড়ক উন্মোচন হয়। এছাড়া তিনি দেশের বিভিন্ন পত্রিকায় কলাম লিখতেন।
মরহুমের নামাজে জানাজায় উপস্থিত হয়ে স্মৃতিচারণ করেন, নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জি এম তালেব হোসেন, নরসিংদী ৩ আসনের নবনির্বাচিত এমপি সিরাজুল ইসলাম মোল্লা, নরসিংদী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির-২ এর জি এম মনোয়ার হোসেন চৌধুরী, নরসিংদী জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন মাস্টার, শিবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সামসুল আলম ভুইয়া রাখিল, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ফরহাদ আলম ভুইয়া, জেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি সামসুল ইসলাম মোল্লা, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মাহবুব আলম মোল্লা তাজুলসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর।
Leave a Reply