হারুনূর রশিদ
নরসিংদীর রায়পুরায় মেঘনা নদীতে অবৈধ বালু উত্তোলনের দায়ে ইউপি সদস্য ও আওয়ামীলীগ নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগের ঘটনা ঘটেছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে এলাকাবাসীর পক্ষে সাইফুল ইসলাম (৩৫) নামে এক ব্যক্তি বাদী হয়ে রায়পুরা থানায় অভিযোগ করেন। উপজেলার চাঁনপুর ইউনিয়নের চাঁনপুর এলাকার মেঘনা নদীতে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্তরা হলেন, চাঁনপুর ইউনিয়ন পরিষদের ১নং ওয়ার্ড সদস্য বশিরুল ইসলাম ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সুলতান মিয়া। স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন যাবত প্রভাবশালী কয়েকটি মহল মেঘনা নদীতে অবৈধ বালু উত্তোলনের কারণে মানুষের সহায়-সম্পদ, স্কুল, মাদরাসা, মসজিদ, কবরস্থান, জমি, জিরাত, বাজারঘাট, স্থাপনা, রাস্তা ইত্যাদি গত কয়েক বছরে বিলুপ্তও হয়েছে। বর্তমানেও ফসলি জমি সহ ভিটেমাটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। নদীতীরবর্তী ভাঙন অব্যাহত। এর আগে একাধিকবার বালু অবৈধ উত্তোলন বন্ধে উপজেলা প্রশাসন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ড্রেজার ও শ্যালো মেশিন জব্দ করে, এরপরেও থেমে নেই বালু তোলা। এরমধ্যে আওয়ামীলীগ নেতা সুলতান মিয়া (৪৫) এর ড্রেজার জব্দ করে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করার ঘটনাও আছে। অভিযোগকারী সাইফুল ইসলাম বলেন, বিবাদীরা নদী তীরবর্তী ফসলি কৃষি জমি, ভিটে মাঠি কেটে নিচ্ছে। বাঁধা দিলে মারধর সহ হত্যার হুমকি দিয়ে আসছে। তাদের হাত মনে হয় খুবই শক্তিশালী, বাধ্য হয়েই এলাকাবাসীর পক্ষে থানায় অভিযোগ করেছি।” একই গ্রামের ফখরুল ইসলাম ‘বালু তোলার কারণে নদীর পাড় ভেঙে যাচ্ছে। স্থানীয়রা ভোগান্তিতে পড়েছেন। যারা বালু তুলছেন তারা খুবই প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ প্রতিবাদ করছেন না। কথা বললেই বিপদ।’ চাঁনপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোমেন সরকার জানান, ‘প্রভাবশালীরা বালু তুলছেন। কোনো অবস্থাতেই এটা বন্ধ হচ্ছে না। আগে বালু তোলায় বাঁধা দিতে গিয়ে বেশ কয়েকবার এলাকাবাসীর অনেকে আহত হয়েছে। প্রতিবাদ করলেই উল্টো মামলা দেয়। প্রভাবশালীদের ভয়ে কেউ কথা বলার সাহস পায় না। গত উপজেলা সমন্বয় সভায় স্থানীয় প্রশাসনকে বিষয়টি জানিয়েছি। স্থায়ী ভাবে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ চাই। অভিযুক্ত ইউপি সদস্য বশির আলম ও আওয়ামীলীগ নেতা সুলতান মিয়ার কাছে অভিযোগের বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও ফোন বন্ধ থাকায় তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। রায়পুরা থানার উপপরিদর্শক মুক্তার হোসেন জানান, গতকাল রাতে এ বিষয়ে অভিযোগ করা হয়েছে। আজকে অভিযোগে কপিটি হাতে পেয়েছি, তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হবে। রায়পুরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোজলিন শহীদ চৌধুরী বলেন, চাঁনপুরের মেঘনা নদী এলাকায় বালু উত্তোলন বিষয়টি আমরা অবগত। ওই এলাকায় একাধিকবার ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়েছে। থানায় অভিযোগের বিষয়টিও আমরা অবগত। তদন্ত সাপেক্ষে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ অভিযুক্ত চাঁনপুর ইউনিয়ন পরিষদের ১নং ওয়ার্ড সদস্য বশিরুল ইসলাম ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সুলতান মিয়া।
Leave a Reply